Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মৎস্য খাত : আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ (১৬ অক্টোবর কার্তিক ১৪২৮)

মৎস্য খাত : আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ

কাজী শামস আফরোজ

আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ। ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি আর ভালো পবিবেশেই উন্নত জীবন। এ প্রতিপাদ্যে উদ্যাপন হচ্ছে এবারের বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২১। যা অত্যন্ত সময়োপযোগী। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের গুরুত্ব অনুধাবন করেই স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে এক জনসভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ।’ বঙ্গবন্ধু কুমিল্লায় এক বিশাল জনসভায় বলেছিলেন, ‘...আমাদের মাটি আছে, আমার সোনার বাংলা আছে, আমার পাট আছে, আমার গ্যাস আছে, আমার চা আছে, আমার ফরেস্ট আছে, আমার মাছ আছে, আমার লাইভস্টক আছে। যদি ডেভেলপ করতে পারি, ইনশাআল্লাহ, এদিন থাকবে না।’


বঙ্গবন্ধুর চিন্তার ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং মৎস্যসম্পদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ ও কার্যকর উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ আজ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় মৎস্য খাতও একটি গর্বিত অংশীদার।


দেশের অর্থনীতিতে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে মৎস্য খাত
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা প্রতিপালনের মাধ্যমে মৎস্য খাত জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলছে। দেশের মোট জিডিপির ৩.৫২ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপির ২৬.৩৭ শতাংশ এবং মোট রপ্তানি আয়ের ১.৩৯ শতাংশ মৎস্য খাতের অবদান। মৎস্য খাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬.১০ শতাংশ (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২০)। মাথাপিছু দৈনিক মাছ গ্রহণের পরিমাণ চাহিদার চেয়ে (৬০ গ্রাম/দিন/জন) বৃদ্ধি পেয়ে ৬২.৫৮ গ্রামে উন্নীত হয়েছে (বিবিএস ২০১৬)। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১৪ লক্ষ নারীসহ ১৯৫ লক্ষ বা ১২ শতাংশের অধিক লোক এ সেক্টরের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়োজিত থেকে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেছে।


মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন
স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২০১৬-১৭ সালে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের মৎস্যচাষকে একটি দায়িত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য খাতে উন্নয়নের লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের পাশাপাশি বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহ নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৪৫.০৩ লক্ষ মে.টন, যা ২০০৮-০৯ সালের মোট উৎপাদনের (২৭.০১ লক্ষ মে.টন) চেয়ে ৬৬.৭২ শতাংশ বেশি; ১৯৮৩-৮৪ সালে দেশে মাছের মোট উৎপাদন ছিল ৭.৫৪ লক্ষ মে.টন। কাজেই ৩৭ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ছয় গুণ। এটি বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের অনন্য সাফল্য।


মৎস্য উৎপাদনে অনন্য সাফল্য : বিশ্বে বাংলাদেশের স্বীকৃতি
মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মৎস্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ১৪২৩ এ স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হয়েছে। মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আজ বিশ্বপরিমণ্ডলেও স্বীকৃত। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার
The State of World Fisheries and Aquaculture 2020 এর প্রতিবেদন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ৩য় স্থান ধরে রেখে বিগত ১০ বছরের অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে দ্বিতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম স্থান গত ছয় বছরের মতোই ধরে রেখেছে। পাশাপাশি বিশেষ সামুদ্রিক ও উপকূলীয় ক্রাস্টাশিয়ান্স ও ফিনফিস উৎপাদনে যথাক্রমে ৮ম ও ১২তম স্থান অধিকার করেছে। বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১ম; তেলাপিয়া উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৪র্থ এবং এশিয়ার মধ্যে  ৩য় স্থান অধিকার করেছে।


মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে গৃহীত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম
অভ্যন্তরীণ বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্যচাষ নিবিড়করণ : মৎস্য অধিদপ্তরের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ সম্প্রসারণ কর্মীগণ মাছ চাষের আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের লক্ষ্যে চাষি প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তি হস্তান্তর, লাগসই সম্প্রসারণ সেবা প্রদান, প্রদর্শনী খামার পরিচালনা ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রচলিত ও অপ্রচলিত মাছ চাষে ফলে সংশ্লিষ্ট সুফলভোগীদের আর্থসামাজিক অবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি খামার/ঘেরের উৎপাদনশীলতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।


অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা: প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে পুকুর-ডোবা, খাল-বিল, বরোপিট, হাওর-বাঁওড় ও নদী-নালায় পলি জমে ভরাট হয়ে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও অবাধ বিচরণের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ সকল জলাশয় সংস্কার, পুনঃখনন ও খননের মাধ্যমে দেশীয় মাছের আবাসস্থল পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি জলাশয়ের পরিবেশ ও প্রতিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার বহুমাত্রিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।


বিপন্নপ্রায় মৎস্য প্রজাতির সংরক্ষণ, অবাধ প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে স্থাপিত প্রায় ৪৩২টি মৎস্য অভয়াশ্রম সুফলভোগীদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রাচুর্য সমৃদ্ধকরণ ও প্রজাতি-বৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে পোনা অবমুক্তি ও বিল নার্সারি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।


জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন : পৃথিবীর প্রায় দুই- তৃতীয়াংশের অধিক ইলিশ উৎপাদনে ইলিশের দেশ হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আসে শুধু ইলিশ থেকে। দেশের জিডিপিতে ইলিশের অবদান এক শতাংশের অধিক; যা একক প্রজাতি হিসেবে সর্বোচ্চ। সরকার নবায়নযোগ্য এ সম্পদের কাক্সিক্ষত উন্নয়নে আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, ৬টি ইলিশ অভয়াশ্রম স্থাপন ও কার্যকর পরিচালনা, দরিদ্র জেলেদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আওতায় জাটকা ও মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের ভিজিএফ প্রদানসহ বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আয় বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।


কোভিড-১৯ কালীন মৎস্য সাপ্লাই চেইন উন্নয়ন : কোভিড-১৯ কালীন মৎস্যচাষিদের মাছ বাজারজাতকরণ গতিশীল করতে মৎস্য অধিদপ্তর স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ মাছ বিক্রয় কেন্দ্র/গ্রোথ সেন্টারের মাধ্যমে মাছ বিক্রয়; অনলাইনে মাছ বাজারজাতকরণ কতিপয় ফলপ্রসূ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।


স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ মাছ সরবরাহে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়ে থাকে। যেমন : আইনি পরিকাঠামো তৈরি; উত্তম মৎস্যচাষ অনুশীলন ও ব্যবস্থাপনা; মৎস্য মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি পরিচালনা;        ব্লু-ইকোনমি এবং সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা।


নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন, স্বাস্থ্যসম্মত মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য সরবরাহ এবং ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত উদ্যোগে অর্জিত হবে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, রপ্তানি আয় প্রবৃদ্ধি ও অভীষ্ট জনগোষ্ঠীর কাক্সিক্ষত আর্থসামাজিক উন্নয়ন। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য অধিদপ্তর অঙ্গীকারবদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের অগ্রযাত্রায় আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

লেখক : মহাপরিচালক, মৎস্য অধিদপ্তর, রমনা, ঢাকা। ফোন : ৯৫৬২৮৬১, ইমেইল: dg@fisheries.gov.bd

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon